|
|
|
Creation date: Oct 18, 2022 12:50pm Last modified date: Oct 18, 2022 12:52pm Last visit date: Oct 22, 2024 4:47pm
1 / 20 posts
Oct 18, 2022 ( 1 post ) 10/18/2022
12:50pm
Santo SEo (seosanto7)
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতাসমূহ বাংলাদেশে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতাে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে কতিপয় বাধা রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন শুরু করার পূর্বে দেশে উন্নয়ন সহায়ক পরিবেশ থাকা প্রয়ােজন। নিম্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এর প্রধান প্রতিবন্ধকতাসমূহ আলােচনা করা হল:
১। সীমিত উৎপাদন ক্ষমতা, স্বল্প মাথাপিছু আয় ও মূলধনের স্বল্পতা: বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের তুলনায় কম, ফলে সঞ্চয় ক্ষমতা কম। মূলধনের স্বল্পতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে একটি অন্তরায়। ২। কারিগরি জ্ঞানের অভাবঃ স্বল্প আয়, জীবনযাত্রার নিম্নমান এবং দেশে কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রের অভাবে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ কারিগরি শিক্ষা লাভে সমর্থ হয় না। ফলে প্রযুক্তি বিদ্যার অভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের পূর্ণ। ব্যবহার হয় না। ৩। বৈদেশিক মুদ্রার অভাব: বাংলাদেশে শিল্পোন্নয়নের প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হয়। এ সমস্ত যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়ােজন, কিন্তু বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ কম । ফলে প্রয়ােজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন সম্ভব হয় না। এতে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যহত হয়। ৪। রাজনৈতিক অস্থিরতা: বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব রয়েছে। একারণে সঠিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও দক্ষ উদ্যোক্তার অভাব, সংকীর্ণ বাজার, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রথা, কৃষি ও শিল্প খাতের অগ্রসরতা, অনুন্নত আর্থসামাজিক কাঠামাে, প্রাকৃতিক সম্পদের অসম্পূর্ণ ব্যবহার, জনসংখ্যার চাপ ইত্যাদি কারণেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বহুলাংশে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরও জানুনঃ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতার সমাধান ১। উন্নত বিশ্বের মত উৎপাদন ক্ষমতা, মাথাপিছু আয় ও মূলধনের গঠন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে হবে। ২। দেশে কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযােগ বৃদ্ধি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। ৩। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্বব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাজার প্রসার লাভ করতে হবে। ৪। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এ বিভিন্ন খাতের অগ্রাধিকার প্রশ্নে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ৫। চীনের মত জনসংখ্যাকে মানব সম্পদে পরিণত করতে হবে। ৬। বৈদেশিক বিনিয়ােগ বৃদ্ধির প্রয়ােজনে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। ৭। এ ছাড়া দেশে দক্ষ উদ্যোক্তার অভাব, সংকীর্ণ বাজার, সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি, কৃষি ও শিল্প খাতের অগ্রসরতার কারন, অনুন্নত আর্থ-সামাজিক কাঠামাে ইত্যাদি দূর করতে হবে। বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রম। ১। আর্থ-সামাজিক অবকাঠামাে গঠনঃ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আবশ্যকীয় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামাে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। বাংলাদেশ সরকার রাস্তাঘাট, সেতু, বাঁধ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি নির্মাণ এবং যােগাযােগ ও পরিবহন ব্যবস্থার সমপ্রসারণ, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রভৃতি ব্যবস্থার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামাে গড়ে তুলতে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখছে। ২। অর্থসংস্থান: বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অর্থসংস্থান। সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ উত্স এবং বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থসংস্থান নিশ্চিত করে বিশেষভাবে দায়িত্ব পালন করে। ৩। আয়-বৈষম্য রাসঃ দেশের আয় বৈষম্য হ্রাস করার মাধ্যমে জনগনের সঞ্চয় ও ভােগ প্রবণতা বাড়িয়ে সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কার নীতির মাধ্যমে বিত্তশালী লােকদের নিকট থেকে আদায়কৃত অর্থ দরিদ্র ও স্বল্পবিত্তের লােকদের কাজে লাগিয়ে আয় বৈষম্য হ্রাস করে। ৪। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি বাংলাদেশ সরকার ক্রমবর্ধমান কর্মসংস্থান ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে। ৫। উন্নয়নের নীতি প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়া গতিশীল করার জন্য সরকার উন্নয়নের নীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। উদাহরণস্বরূপ কৃষি উন্নয়ন বা কৃষিনীতি, শিল্প উন্নয়ন বা শিল্পনীতি, বাণিজ্যনীতি প্রভৃতি। ৬। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আবশ্যক। সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এর জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। ৭। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নঃ বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ক্ষেত্রে বিনিয়ােগ কার্যক্রম দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকেন। ৮। প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার: দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের আহরণ ও সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৯। বহির্বাণিজ্যের উন্নয়ন: উন্নত রাষ্ট্রগুলাের সঙ্গে সৌহাৰ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সরকার বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্থান করে নিতে চেষ্টা চালায়। নিরপেক্ষ বাণিজ্যনীতি ও নিয়ন্ত্রিত আমদানি ও রপ্তানি নীতির মাধ্যমে সরকার বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রতিকুলতা বহুলাংশে দূর করার চেষ্টা চালায়। সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে ভূমিকা পালন করছে তা প্রশংসার যােগ্য হলেও দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ও দেশের জনগনের স্বাচ্ছন্দ্য আনয়নে সরকারকে আরও ক্রমবর্ধমান হার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করতে হবে। আরও জানুনঃ
আরও জানুনঃ ৮৯৪টি প্রকল্পে মােট ৫৩,৬৯৭ কোটি টাকা। ব্যক্তিখাতে তৈরি পােশাক ও নীটওয়ার বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিকাশ বাংলাদেশের শিল্প খাতকে গতিশীল করে তুলছে এবং দেশে বিনিয়ােগ-সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখছে। ফলে এ খাতে বিদেশি বিনিয়ােগ আকৃষ্ট হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে (ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত) মােট উৎপাদিত বিদ্যৎ ২২.৬৯১ মিলিয়ন কিলােওয়াট আওয়ার যার ৪৫.৫১ শতাংশই বেসরকারি খাতে উৎপাদিত হয়েছে এবং ৬.৯১ শতাংশ বিদ্যুৎ আমদানি খাত হতে এসেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশের মােট বিনিয়ােগ জিডিপির ২৮.৯৭ শতাংশ যার মধ্যে বেসরকারি খাতের অবদান ২২.০৭ শতাংশ (উত্স: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৫)। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানাের ক্ষেত্রে সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) প্রকাশিত ডুয়িং বিজনেস, ২০১৪ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী এজ অব ডুয়িং বিজনেস গ্লোবাল ব্যাংক এ বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৭৩তম। তবে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৩তম। তাছাড়া ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশর অবস্থান ১৩১তম এবং ব্যবসা শুরু ও কর প্রদানের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১১৫তম ও ৮৩তম স্থানে রয়েছে। আমাদের পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনাসমূহে বেসরকারি খাতে বরাদ্ধ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনায় বেসরকারি খাতে সর্বাধিক পরিমাণ যা মােট বরাদ্দের ৫৬.১৭ শতাংশ। বেসরকারি উদ্যাক্তাদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। তাই আশা করা যাচ্ছে, আগামীতে আমাদের বেসরকারি খাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এ যে ভূমিকা পালন করছে তা প্রশংসার যােগ্য হলেও দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ও দেশের জনগনের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে সরকারের আরও উদ্যোগী হতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারী খাতের ভূমিকা উল্লেখযােগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরও জানুনঃ
আরও জানুনঃ
|